ঢাকা,রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪

রামু উপজেলা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়ম-দূর্ণীতির অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রামু ::   কক্সবাজারের রামু উপজেলা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা জুয়েল ভূইয়া’র বিরুদ্ধে ব্যাপক দূর্ণীতি, স্বেচ্ছাচারিতা সহ নানা অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অনিয়মে অতিষ্ঠ আনসার ও ভিডিপি সদস্যরা দূর্নীতিবাজ আনসার ভিডিপি কর্মকর্তার অনিয়মের প্রতিকার ও সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়ে, আনসার ভিডিপি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক, দূর্নীতি দমন কমিশন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

লিখিত অভিযোগে, বিভিন্ন কর্মসূচিতে দায়িত্ব পালনকারি আনসার ভিডিপি সদস্যদের কাছ থেকে উৎকোচ গ্রহন, নিজের ইচ্ছে মত ব্যক্তিদের সরকারি কর্মসূচিতে দায়িত্ব পালনে নিয়োজিত করা, আনসার-ভিপিপি সদস্যদের সাথে চরম অসৌজন্যমূলক আচরণ সহ আরো নানান অনিয়মের তথ্য দেয়া হয়েছে।

লিখিত অভিযোগসমূহে উল্লেখ করা হয়েছে, বিগত ৭ মাস পূর্বে রামু উপজেলা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন জুয়েল ভূইয়া। যোগদানের পর থেকে উপজেলা প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ এ কার্যালয়কে দূর্ণীতির আখড়ায় পরিনত করেছেন তিনি।

এতে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, যোগদানের কিছুদিন পরই রামুর কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের গ্রাম ভিত্তিক ১০ দিন ব্যাপী মৌলিক প্রশিক্ষণ শুরু হয়। ওই প্রশিক্ষণে ৬৪ জন পুরুষ-মহিলা অংশ নেয়ার কথা থাকলেও অংশ নেয় মাত্র ৪৩ জন। অবশিষ্ট সদস্যদের সম্মানির অর্থ আত্মসাৎ করেন, আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা জুয়েল ভূইয়া। এর কিছুদিন পর শারদীয় দূর্গোৎসবে দায়িত্ব পালনকারি প্রত্যেক আনসার ভিডিপি সদস্যদের কাছ থেকে ৫০০ টাকা করে উৎকোচ নেন তিনি।

পরবর্তীতে উপজেলা আনসার ভিডিপি সমাবেশে ২০০ জন উপস্থিতির কথা থাকলেও মাত্র ৮০ জন দিয়ে সেই সমাবেশ সম্পন্ন করে বিপুল অর্থ আত্মসাৎ করেন, আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা নিজেই। তাছাড়া বিগত ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে প্যারেডে অংশ নেয়া আনসার সদস্যদের সম্মানি বাবদ প্রাপ্ত ৩২ জনের অর্থ নিজেই আত্মসাৎ করেন। এনিয়ে সম্প্রতি মাসিক সভায় আনসার দলনেতা-দলনেত্রীদের মধ্যে হট্টগোল সৃষ্টি হয়।

বিগত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রামু উপজেলার ৬১টি ভোট কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনকারি প্রতি প্লাটুন আনসার-ভিডিপি দল থেকে ৮-১০ হাজার টাকা উৎকোচ নেন তিনি। এসব অনিয়মে কতিপয় আনসার ভিডিপি সদস্যরাও জড়িত বলে জানা গেছে।

আগামী ২৪ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য রামু উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে রামুর ৬১ টি ভোট কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনের জন্য প্রত্যেক আনসার ভিডিপি প্লাটুন থেকে ৫ হাজার টাকা করে উৎকোচ নিচ্ছেন বিতর্কিত এ আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা। এমনকি ইউনিয়ন কমান্ডারদের কোন প্লাটুন না দিয়ে নিজের পছন্দের ব্যক্তিদের প্লাটুন দিচ্ছেন। আবার উৎকোচ নিয়ে অনেক আনসার ভিডিপি সদস্য নয় এমন ব্যক্তিদের প্লাটুনে অর্ন্তভূক্ত করছেন। এসব অনিয়ম নিয়ে কথা বললে আনসার ভিডিপি সদস্যদের রোহিঙ্গা বলে আখ্যায়িত করেন এবং লাঞ্চিত করে অফিস থেকে বের করে দেন বলেও গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।

জানা গেছে, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করলে আনসার ভিডিপি দলনেতা আনসার ভিডিপি ভাতা পাওয়ার বিধান নেই। কিন্তু রামু উপজেলা আনসার ভিডিপি অফিসে এ নিয়ম মানা হচ্ছে না। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দূর্ণীতিবাজ এ কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে একাধিক দলনেতা সরকারি-বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেও আনসার-ভিডিপি ভাতা উত্তোলন করে যাচ্ছে।

স্মার্টকার্ড প্রাপ্ত আনসার ভিডিপি সদস্য মোহাম্মদুল কবির জানান, বিগত সংসদ নির্বাচনে তিনি দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এখন উৎকোচ না দেয়ায় তাকে দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে না। সম্প্রতি তিনি এ নিয়ে প্রতিবাদ জানালে উল্টো তাকে হুমকী-ধমকী দিয়ে রোহিঙ্গা বলে অফিস থেকে চলে যেতে বলেন।

উপজেলার গর্জনিয়া ইউনিয়ন আনসার দলনেতা মো. নুরুল হাকিম জানান, আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা জুয়েল ভূইয়া টাকা ছাড়া কাউকে কোন সময় ডিউটিতে দেন না। নির্বাচন, প্রশিক্ষণ, পূজা, উৎসব সেখানে আনসার নিয়োগ সেখানেই তিনি উৎকোচ নেন। এনিয়ে প্রতিবাদ করলে তিনি তাদের উল্টো হুমকী দেন।

উপজেলা মহিলা কমান্ডার পারভীন আকতার, আনসার কমান্ডার মোহাম্মদুল হক জানান, আনসার ভিডিপি কর্মকর্তার অনিয়ম-দূর্ণীতির কারনে সরকারি গুরুত্বপুর্ণ এ প্রতিষ্ঠানটির সুনাম চরমভাবে ক্ষুন্ন হচ্ছে। অপরদিকে সরকারি আনসার-ভিডিপি সদস্যদের গুরুত্ব দিয়ে বিভিন্ন কর্মকান্ডে ভাতা ও অন্যান্য সুবিধাদি বৃদ্ধি করলেও রামুতে এর সুফল থেকে আনসার-ভিডিপি সদস্যরা বঞ্চিত হয়ে আসছে। এ কারনে তারা দূর্ণীতিবাজ আনসার ভিডিপি কর্মকর্তার নানান অনিয়ম তুলে ধরে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ বা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তারা এসব অভিযোগে সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থ গ্রহনের জোর দাবি জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রামু উপজেলা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা জুয়েল ভূইয়া, উল্লেখিত সকল অনিয়ম ও দূর্নীতির বিষয় সত্য নয় বলে জানান। তিনি সাংবাদিকদের আরো জানান, অনেকে সুযোগ না পেয়ে এসব অভিযোগ দিয়েছে। যা তদন্তে মিথ্যা প্রমাণিত হবে।

##########################

রামু পিক-আপ মিনিট্রাক চালক-শ্রমিক সমবায় সমিতি লি. এর নির্বাচন সম্পন্ন

সোয়েব সাঈদ, রামু ::

রামু উপজেলা পিকআপ-মিনিট্রাক চালক শ্রমিক সমবায় সমিতি লিমিটেড (রেজিঃ নং ৬০০/১) এর ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। এতে মোস্তাক আহমদ সভাপতি (বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায়) এবং সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্ধিতাপূর্ণ নির্বাচনে কলিম উল্লাহ সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন।

এছাড়া নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত অন্যান্য কর্মকর্তারা হলেন, সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হারুন, কোষাধ্যক্ষ আবু তাহের, কার্যকরি সদস্য মো. রাসেল, ফরিদুল আলম, ওবাইদুল হক, নুরুল হাকিম, ইমাম শরীফ, অছিয়র রহমান, মো. হোসেন ও মো. রাজ্জাক।

শুক্রবার (১৫ মার্চ) রামু বাইপাসস্থ সমিতির নিজস্ব কার্যালয়ে একমাত্র সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে ১৩৪ ভোট পেয়ে কলিম উল্লাহ (দেয়াল ঘড়ি) সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী হেলাল উদ্দিন ভুট্টো (গোলাপ ফুল) ১১৯ ভোট পান। সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ৩০৭ জন ভোটারের মধ্যে ২৫৩জন ভোটার গোপন ব্যালটের মাধ্যমে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।

নির্বাচন পরিচালনায় ছিলেন, রামু উপজেলা সমবায় অফিসার মোঃ সলিম উল্লাহ, রামু থানার উপ-পরিদর্শক মুকিবুল হোসেন, সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আক্তার আলম, রুপন শর্মা, নেপাল বড়–য়া প্রমূখ।

নব নির্বাচিত সভাপতি মোস্তাক আহমদ এবং সাধারণ সম্পাদক মোঃ কলিম উলাহ সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ায় উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা, সংগঠনের সদস্যবৃন্দ সহ সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন এবং তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

পাঠকের মতামত: